রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১

পয়লা আষাঢ়



শুরুতে বলি সায়মার একটা অদ্ভুত ক্ষমতা আছে মানুষকে মুগ্ধ করার। সে সবাইকে মুগ্ধ করতে ভালোবাসে।
আমার জানা মতে, কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ এই কাজটি খুব ভালোভাবে করতেন।

আজ ছিলো আষাঢ়ের প্রথম দিন।
সকাল থেকেই দফায় দফায় কখনো হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি এবং মাঝে মাঝে প্রচণ্ড রোদ। কনফিউশন এই সিচুয়েশনের মধ্যে দিয়েই সাতসকালে ঘর থেকে বেরুলাম। আষাঢ় বলে কথা; ঘরে ফিরতে ফিরতে একদফা বৃষ্টিতে ভিজতেই হলো। এ যাত্রায় বৃষ্টির গুণ কীর্তন বর্ননা করতে পারলাম না।

যাগ্গে, ঘরে আসার পরপর সায়মন সায়মার পায়চারি।
আমাদের দুজনের কথোপকথনের একাংশ;
সায়মন: আপা, চলেন আজকে আপনারে বাতিঘর থেইকা বই গিফট করি। [মুগ্ধ করার প্রথম ব্যর্থ চেষ্টা]
আমি: সায়মা আপু খুব ক্লান্ত। [গম্ভীরস্বরে] আপাতত বিরক্ত করিস না প্লিজ।

কিছুক্ষণ পর আবার;
আপা চলেন না প্লিজ...
আমি বললাম শুন বাতিঘরে বৃহস্পতিবার যাবো। সেদিন বই গিফট দিস। আজ রাখ।

কে শুনে কার কথা। এসপারওসপার সে যাবেই।
আমাকে নানাবিধ লোভনীয় অফার দিতে থাকলো। আমিও শুনতে লাগলাম। কফি খাওয়াবে, বই দিবে, পছন্দের খাতা কিনে দিবে এসব চলতেই থাকলো.....

যাই হোক লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু এটি যেনোও 'বই গিফট পাওয়ার' লোভে পড়ে গেলাম।
আমি যাবো সেই সুবাধে সায়মা খুশি। তাঁর খুশিতে আমিও খুশি।
ওয়েদারটাও উৎসবমুখর। রোদ-বৃষ্টির এলোপাথাড়ি আগমন আমার বেশ ভালো লাগে।

বাতিঘরে পৌঁছালাম। বসে আলাপ করছি। দেশ/বিদেশের সব উঠে আসছে। শঙ্খঘোষের কবিতার বই, হরিদাসের আলাপচারিতা, কিছু পত্র-পত্রিকা ঘাটাঘাটি করতে করতেই টুক করে সায়মন সায়মার একটা আবদার হাজির হলো।

সায়মা: আপা, চলেন দুই বোন মিলে একটা জমপেশ বই লিখি।
আমি: আচ্ছা। দেখি। [যথারীতি গম্ভীরস্বরে]
সায়মা খুব কনফিডেন্স নিয়ে আমাকে বুঝাচ্ছে বাজারে বইটা চলবে, দ্বীনের কাজে আসবে।
আমি হু/হা তেই পড়ে আছি। গা-ছাড়া ভাব আর কি।

কথার ফাঁকফুকুড়ে সায়মা ব্যাগ থেকে কলম আর কাগজ বের করে কি যেন একটা লিখতে লাগলো।
লেখা শেষ করে কাগজটা আমার হাতে দিলো। বলল আপা দেখেন-

কাগজটা হাতে নিলাম। আমি দেখলাম। সায়মা লিখল;

[লেখক: সালমন সালমা ও সায়মন সায়মা।
উৎসর্গ - আমাদের সর্বজয়া আম্মাকে]

কি দারুণ তাঁর অবাক করার চেষ্টা। আমি কাগজটা দেখে মুগ্ধ হলাম। সায়মার চোখেমুখে একটা উল্লাস দেখলাম। ভাবি,মানুষের উদযাপন কত সুন্দর হয়। কত পরিষ্কার হয়। আহা, সায়মন সায়মা তুজসে সেলাম!

সালমন সালমা, বাতিঘর'২১, চট্টগ্রাম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

রমজানে মী-টাইম, উই-টাইম বের করা খুব টাফ ছিলো। রমজানের একটা ব্যস্ততা তো থাকেই তার সাথে সাথে সবার অফিসের কাজের চাপ। সবমিলিয়ে আমরা একসাথে থাকলে...