রোজনামা— ০১
একটা বছর যায় আর— আমি ক্রমশ পৃথিবীর আদিমতম কেউ হয়ে উঠি। আমার সাথে সাথে একটা ঐতিহ্য, একটা ইতিহাস বাড়তে থাকে— বৃদ্ধ হয়। দিস্তা-দিস্তা নতুন সংযোজন হতে থাকে। পুরোনো অনেক কিছুকে গলা টিপে হত্যা করা হয়।
একটা মফস্বল হারিয়ে ফেলে তার নিজের গতিপথ। একা— এক সময় স-ব পুরোনো মিলিয়ে যায় বাতাসের সাথে। সেই—সব কিছুর রাজসাক্ষী হয়ে বেড়ে উঠছি আমি। আমার আগামীর কাছে— আমি আদিম মানুষে রুপ নিচ্ছি।
দুই হাজার-কুড়িতে যেই শূন্যতা আমাকে পেয়ে বসেছে— সেই শূন্যতা কোনো বছরের পূর্ণতা দিয়ে পূরণ করা সম্ভব না। শূন্যতা শূন্যতাই। বেদনার যেমন কোনো রঙ হয় না—শূন্যতারও না। তবুও— সব কিছু ছাপিয়ে বলতে হয়, একুশ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে— বরঞ্চ, দু'হাত ভরে দিয়েছে। সবচে বড়ো কথা একুশ আমাকে আচমকা বড়ো করেছে। আম্মার বিয়োগে— ঘরের ছাদ ফুড়ে আকাশ স্পর্শ করার মতোন বড়ো করেছে।
একুশের এই যাত্রায়— অনেকের সাথে আলাপ হয়েছে, কাজ হয়েছে। অজস্র পরিপূর্ণতা আমাকে ছুঁয়েছে। কৃতজ্ঞতায় আমার রুহ গলে যায়— গদগদ হয়ে ওঠে।
দিনশেষে আমিও কাঠগড়ায়। দীর্ঘতম শ্বাস নিয়ে বলতে হয়— মানুষ তো! গালগল্পে— নিজেকে মাটির মানুষ হিসাবে চর্চা করতে করতে, চোখ তো কখনো কখনো অহংবোধের সাথে কথার ফুলঝুরি ছিটায়। আমার করা সেইসব অহংবোধ— যদি কারোর কোনো দুঃখের কারন হয়ে থাকে; তবে ক্ষমা চাই।
'বাইশ' আমার জীবনে একুশের মতোই হুল্লোড়ে থাকুক। পূর্ণতায় থাকুক। মায়াতে থাকুক। আমার প্রতিটা নতুন বছর যেনো কেবল সংখ্যা বদলে আসে— একুশের আদলেই। এটাই চাওয়া। আপনারা আমাকে মঙ্গল কামনায় রাখবেন।
উঠোন জুড়ে মিঠাদুপুর— ভাবি; আমার— এখনো কত সকাল দেখা বাকি, এখনো কত রাত নামে নি। এখনো কত দুঃখ ছোঁয় নি আমায়, এখনো কত সুখের তৃপ্তি— অনাদায়ী।
সবাই কে নতুন বছরের শুভেচ্ছা। অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
ফজরে মুয়াজ্জিনের দরদমাখা কন্ঠ, অলসদুপুর, ট্রাফিকজ্যাম, মাগরিবের নীরবতা— সব কিছু ছুঁয়ে যাক আপনাকে; আমাকে। যা কিছু ভুল— ভুলে যান। নতুন করে মরমি মোলাকাত দিয়ে শুরু করেন পুরানো ধাঁচের নতুন হালখাতা। 🌿