বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১

বই: বিশ্বনবী। 
লেখক: গোলাম মোস্তফা।
প্রকাশনী: আহমদ পাবলিশিং হাউস।
প্রকাশক: মেজবাহউদ্দীন আহমদ।
প্রচ্ছদ: আমানউল্লাহ।
বর্ণবিন্যাস: ইয়াশা কম্পিউটার।
প্রথম সংস্করণ: অক্টোবর ১৯৪২
মুদ্রিত মূল্য: ৪০০ টাকা মাত্র
পৃষ্ঠা: ৪৭২


_______________________________

একই জীবন, একই কাহিনী, একই চিন্তা, একই কর্মধারা। সে একই কথা—বহুমুখে, বহুজনে, বহুশতাব্দী ধরে বাতাসে-বাতাসে ফিরছে, তবু যেন অফুরান—যেন কিছু লেখা হলো আর অলিখিত রয়ে গেল ঢের। কিছু বলা হলো আর অনেক কিছুই হয়নি বলা। এ চর্চাক্ষেত্র বারবার কেন জানি অপূর্ণ রয়ে যায়। এ যেন রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের মত শেষ হইয়াও হইলো না শেষ—

এ যাবৎ অবধি— মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে অসংখ্য জীবনীগ্রন্থ লেখা হয়েছে। একেবারে প্রাচীনকাল থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত বহুলেখক, সাহিত্যবিশারদ, গবেষক এবং অনেক কবিদের হাতে হয়েছে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান জীবনের চর্চা। এই চর্চা কখনো হয়েছে আরবী ভাষায় আবার কখনো অনারব ভাষায়ও। উর্দু ভাষায়, ফার্সি ভাষায়, আরবি ভাষায় মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনীগ্রন্থের অভাব নেই। তবে সেই তুলনায় আমাদের বাংলা ভাষায় এর ব্যাপকতা খুবই কম। 

বাংলা সাহিত্যে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে প্রথম গ্রন্থ রচনা করেন শেখ আবদুর রহীম। তারপর তাঁর সিরাত নিয়ে রচনা করার কাতারে এসেছে আরো বহুনাম, আরো বহুসাহিত্যিক। তারমধ্য কবি 'গোলাম মোস্তফা' একজন। তার সৃষ্টি 'বিশ্বনবী'। তাঁর  সীরাত সাহিত্যের এই 'সৃষ্টির' পরতে পরতে শিহরণ ও ছত্রে ছত্রে সাহিত্যরসের হিমশীতল সমীরণ। ভাষার মাধুর্য, মুগ্ধকর বর্ণনা, সুনিপুণ উপস্থাপনা, মননশীল শৈলী ও চিত্রায়ন—গ্রন্থটিকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

আমার মনে পড়ে, ছেলেবেলায় কবি 'গোলাম মোস্তফা'র প্রার্থনা কবিতা দিয়ে তাঁর সাথে আমার প্রথম পরিচয়ের কথা।  
কবিতায় তিনি বলেছেন—
"দ্যুলোক-ভূলোক সবারে ছাড়িয়া
তোমারি চরণে পড়ি লুটাইয়া
তোমারি সকাশে যাচি হে শকতি
তোমারি করুণাকামী"
সেই ছেলেবেলায়—সেই প্রাথমিকে, কি নিদারুণ শব্দে তিনি আমাদের রবকে চিনিয়েছেন।
প্রার্থনা কবিতা দিয়ে শুরু হলেও তারপর গোলাম মোস্তাফার সৃষ্টির সবকিছুই কমবেশি পড়ার চেষ্টা করেছি। সাম্প্রতিক সময়ে পড়লাম তাঁর রচিত জীবনীগ্রন্থ 'বিশ্বনবী'। আজ সেই গ্রন্থটি নিয়েই আলাপ করবো, ইনশাআল্লাহ। 

১৯৪২ সালে চুঁচুড়া থেকে কবি গোলাম মোস্তফা রচিত ‘বিশ্বনবী’ প্রকাশিত হয়। গোলাম মোস্তফা (জন্ম: ১৮৯৭ - মৃত্যু: ১৩ অক্টোবর ১৯৬৪), একজন বাঙালি লেখক এবং কবি। তাঁর কাব্যের মূল বিষয় ছিল ইসলাম ও প্রেম। মুসলিম জাগরণের অগ্রদূত কবি গোলাম মোস্তফার অবদান বাংলা সাহিত্যে এক বিরল দৃষ্টান্ত। তাঁর রচিত ‘বিশ্বনবী’ একটি আশ্চর্য রকমের সফল সৃষ্টি। এই অমর গ্রন্থখানি গদ্যে রচিত হলেও সে গদ্যও—কবিতার মত ছন্দময় এবং মধুর। গ্রন্থখানা বিশ্বনবী হয়রত মুহম্মদ এর একটি সার্থক জীবন চরিত। গ্রন্থটিতে হৃদয়ের আবেগ, আন্তরিক অনুভূতি যে ভাবে বর্ণিত হয়েছে তার তুলনা আমাদের বাংলা সাহিত্যে নিতান্তই বিরল।
আমি মনে করি, এই বইটাকে শুধু একটা জীবনীগ্রন্থ বললে ভুল হলা হবে। কারন, এর দার্শনিক বিবৃতিকে অস্বীকার করবার জো নেই। নবীজীর জীবনের বিভিন্ন দিক পয়েন্ট বাই পয়েন্ট ধরে আমার মনে হয়না আগে কেউ এভাবে আলোচনা করেছেন। বইটির প্রথম খন্ডে মোট ৫৮টি ও দ্বিতীয় খন্ডে মোট ১৪ টি পরিচ্ছেদে আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিটি পরিচ্ছেদের আলোচনা অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত, হৃদয়গ্রাহী ও প্রাঞ্জল। শব্দের সাথে শব্দের সখ্যতা, সাবলীল উপস্থাপন, বাক্যালাপের সুনিপুণ গাঁথুনি—সব মিলিয়ে আদ্যপ্রান্ত গ্রন্থটিই আমার অন্তরের খুব কাছের। আমার প্রিয় পাঠের সর্বোচ্চ চূড়ায় থাকবে এই গ্রন্থটির নাম।
তবে মনে রাখতে হবে, 'বিশ্বনবী' নিঃসন্দেহে একটি গবেষণাগ্রন্থ, সর্বসাধারণের বোধগম্যও। এর কোন আলোচনা যুক্তির ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েনি, আবার আবেগের বশবর্তী হয়ে কোন অযৌক্তিক কিছুকে প্রশ্রয়ও দেয়া হয়নি। 

গ্রন্থটি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত অথচ মোটাদাগে একটা ধারণা পেতে পারেন—সেই সুবাদে নিম্নে সূচিপত্রটি উল্লেখ করলাম। 

সূচিপত্র—

প্রথম খণ্ড
* আমিনার কোলে
* কোন আলোকে
* প্রতিশ্রুতি পয়গম্বর
* বংশ পরিচয়
* নামকরণ
* সমসাময়িক পৃথিবী
* শিশুনবী
* প্রকৃতির কোলে
* বক্ষ-বিদারণ
* শিশুনবী এতিম হইলেন
* সিরিয়া ভ্রমণ
* আল-আমিন
* শাদী মুবারক
* কাবাগৃহের সংস্কার
* গৃহীর বেশে
* সত্যের প্রথম প্রকাশ
* সত্যের স্বরূপ
* সত্য প্রচারের আদেশ
* সত্যের প্রথম প্রচার
* প্রথম তিন বৎসর
* সংঘর্ষের সূচনা
* উৎপীড়ন
* এ আগুন ছড়িয়ে গেল সবখানে
* প্রতিক্রিয়া আরম্ভ হইল
* সাহারাতে ‘ফুটলরে ফুল’
* অন্তরীণ বেশে
* সর্বহারা
* তায়েফ গমন
* আল মি’রাজ
* অন্ধকারের অন্তরালে
* হিযরতের পূর্বাভাস
* শিষ্যদিগের প্রস্থান
* হিযরত
* আল-মদিনায়
* প্রেমের বন্ধন
* ইসলামিক রাষ্ট্র রচনা
* মদিনার আকাশে কালো মেঘ
* বদর-যুদ্ধ
* বদর-যুদ্ধের পরে
* ওহদ যুদ্ধ
* জয় না পরাজয়
* ওহদ যুদ্ধের শেষে
* চতুর্থ ও পঞ্চম হিযরীর কয়েকটি ঘটনা
* আয়েশার চরিত্রে কলঙ্ক-দান
* খন্দক যুদ্ধ
* ষষ্ঠ হিযরীর কয়েকটি ঘটনা
* হোদায়বিয়ার সন্ধি
* দিকে দিকে গেল আহবান
* খায়বার বিজয়
* মুলতবী হজ
* মুতা-অভিযান
* মক্কা বিজয়
* মক্কা-বিজয়ের পরে
* হোনায়েন ও তায়েফ অভিযান
* তাবুক অভিযান ও অন্যান্য ঘটনা
* বিদায় হজ
* পরপারের আহবান
* শেষ কথা

দ্বিতীয় খণ্ড
* পূ্র্বাভাষ
* হযরত মুহাম্মদ জন্ম তারিখ কবে
* কাবা শরীফ কখন নির্মিত হইয়াছিল
* ইসলাম ও পৌত্তলিকতা
* ইসলাম ও মো’জেজা
* স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক
* বিজ্ঞান আজ কোন পথে
* ইসলাম ও নূতন বিজ্ঞান
* মি’রাজ
* থিওসফী ও মি’রাজ
* ‘মুহম্মদ’ ও ‘আহমদ’ নাম কি সার্থক হইয়াছে
* মুহম্মদ ‘মুহম্মদ’ ছিলেন কিনা
* হযরতের বহু বিবাহের তাৎপর্য
* মুহম্মদ ‘আহ্‌মদ’ ছিলেন কি-না

সত্যি বলতে—মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি তাঁর অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসাই বইটিকে অসাধারণ জনপ্রিয় করে তুলেছে। 'বিশ্বনবী' সম্বন্ধে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর অভিমত— “মৌলভী গোলাম মোস্তফা কবিররূপে সুপরিচিত। তাঁহার নব অবদান ‘বিশ্বনবী'। বলা বাহুল্য, ইহা ‘বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদের (সঃ) একটি সুচিন্তিত প্রায় ৫০০ পৃষ্ঠাব্যাপী জীবনচরিত। এই গ্রন্থকার আঁ-হযরত সম্বন্ধে তাঁহার দীর্ঘকালের গভীর চিন্তা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিচয় দিয়াছেন। আমরা এই পুস্তকখানিতে গোলাম মোস্তফা সাহেবকে একজন মোস্তফা-ভক্ত দার্শনিক ও ভাবুকরূপে পাইয়া বিস্মিত ও মুগ্ধ হইয়াছি । ভাষা, তথ্য ও দার্শনিকতার দিক হইতে গ্রন্থখানি অতুলনীয় হইয়াছে।”
অন্যদিকে, শ‍্রী মনোজ বসু বলেছেন— “মহানবীর পরমাশ্চর্য বৃত্তান্ত লেখার সময় আপনার কবি ধর্ম সর্বদা আপনাকে গণ্ডিসংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে রেখেছে। আমি ও আমার মত আরও অনেকে ধর্মে মুসলমান না হয়েও হযরতকে একান্ত আপনার বলে অনুভব করতে পেরেছি। ভাষা, কবিত্বঝঙ্কার ও ভাব—লালিত‍্যে বইটি অপরূপ মহিমা লাভ করেছে।”
আবার, ফুরফুরা শরীফের পীর মাওলানা আবু নসর মুহম্মদ বলেন—“যাঁহারা বাংলা ভাষায় হযরত রসূলে করীমের (সঃ) সঠিক জীবনী ও সত‍্যরূপ জানিতে চান, তাহাদিগের ‘বিশ্বনবী’ পাঠ করিতে অনুরোধ করি।"

কবি বইটি গদ্য দিয়ে শুরু করলেও শেষ করছেন পদ্য দিয়েই। শেষ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন—

তুমি যে নূরের রবি
নিখিলের ধ্যানের ছবি
তুমি না এলে দুনিয়ায়
আঁধারে ডুবিত সবি।
নবী না হয় দুনিয়ায়
না হয়ে ফেরেশতা খোদার
হয়েছি উম্মত তোমার
তার তরে শোকর হাজার বার!

মরুভাস্কর নবীর প্রতি লেখকের ভক্তির সুরভি দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে—
‘বিশ্বনবী’ রচনায় কবি গোলাম মোস্তফা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি যে শ্রদ্ধা, ভালবাসা, হৃদয়াবেগ, অনুরাগ, ভক্তি ও নবীপ্রেমের আন্তরিক ভাবোচ্ছ্বাসের তরঙ্গময় প্রকাশ ঘটিয়েছেন; তার ফলে, কবির গোলাম মোস্তফা (নবীর ভৃত্য/গোলাম) নামটি যথার্থ ও স্বার্থক হয়েছে। 

গ্রন্থটিতে নেতিবাচক কিছু বিষয় থাকলেও আজকের আলোচনায় আর টানছি না। তবে, উত্তরসমেত একটি প্রশ্ন নিম্নে আপনাদের নিকট পেশ করছি। 
প্রথমত বলি, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কেনো জানতে হবে আর জানার জন্য গোলাম মোস্তাফার 'বিশ্বনবী' বইটিই বা কেন পড়তে হবে? 
উত্তর: দুনিয়াতে আমাদের জীবনযাপনে, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রজীবনের প্রতিটি অঙ্গনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের জন্য উত্তম ও অনুপম আদর্শ। এই কথাটি অস্বীকার করবার কোনো উপায় নেই। এ কারণে এমনিতেই তাঁর(মুহাম্মদ) জীবনী পাঠ করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য একান্ত কর্তব্য। 
অবশ্যপাঠ্য এই জীবনীগ্রন্থ যদি রচিত হয় সাহিত্যসমৃদ্ধ ভাবাবেগপূর্ণ ভাষায়, তা হলে তা হয়ে উঠে সাহিত্যপ্রেমীদের জন্য বাড়তি আনন্দ ও খুশির কারণ। বক্ষ্যমাণ বইটির সাহিত্যমান সম্পর্কে কিঞ্চিত ধারণা পেতে বাংলা একাডেমীর সাবেক পরিচালক সৈয়দ আলী আহসানের মন্তব্যটি অবশ্যই প্রণিধানযোগ্য। বইটির মূল্যায়ন করতে গিয়ে তিনি কি বলছেন; পড়ুন—“বাংলা সীরৎ গ্রন্থগুলির মধ্যে কবি গোলাম মোস্তফার বিশ্বনবী যেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে অন্য কোনোটির ভাগ্যে তা হয় নি। এর ভাব যেমন উচ্চস্তরের, ভাষাও তেমনি প্রাঞ্জল, গতিশীল ও ওজস্বিনী। কবি গোলাম মুস্তফা একাধারে সুনিপুণ বাকশিল্পী, কবি ও ভক্ত। তাই তার আন্তরিকতাপূর্ণ ভক্তির ভাবোচ্ছ্বাস ও কাব্যের লালিত্য গ্রন্থটিকে সুষমামণ্ডিত করেছে। তার ভাব ও ভাষায় ভক্তিপ্রবণ বাঙালি অন্তরের মর্মকথাই কাব্যের ললিত রচনায় প্রতিধ্বনিত হয়েছে। ভক্ত প্রেমিকের মধুঢালা রচনাবিন্যাস বইটিকে অসাধারণ জনপ্রিয়তার অধিকারী করেছে।”

গোলাম মোস্তাফার ‘বিশ্বনবী’র যে কোনো পাঠক সৈয়দ আলী আহসানের কথার সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করবেন বলে আমার বিশ্বাস। তাই সাহিত্যরস আহরণ ও আস্বাদনে প্রয়াসী হবার সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রজীবনে নববী আদর্শের উজ্জীবন ঘটাতে আগ্রহী প্রতিটি ব্যক্তিকেই আমি মনোহর প্রচ্ছদ ও ঝকঝকে ছাপার কালজয়ী এই বইটি সংগ্রহ করে পাঠ করার জন্য বিনম্র পরামর্শ প্রদান করে বিদায় নিচ্ছি। আমার বিশ্বাস, এ বিশাল গদ্য কাব্যটি আরও সুদীর্ঘকাল বাঙালি পাঠককে বিমুগ্ধ করে রাখবে—যেমনভাবে বিগতদিনগুলো আমাদের রেখেছে। পরিশেষে এককথায় বলতে পারি— 'বিশ্বনবী' আমার 'সুখকর' পাঠের মধ্যে একটি। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

রমজানে মী-টাইম, উই-টাইম বের করা খুব টাফ ছিলো। রমজানের একটা ব্যস্ততা তো থাকেই তার সাথে সাথে সবার অফিসের কাজের চাপ। সবমিলিয়ে আমরা একসাথে থাকলে...